ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা যায়। কিন্তু কিভাবে ফরম নাম্বার দিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার ও অনলাইন কপি বের করবেন তা জানেন না।

এই লেখাটিতে ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা সম্পূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হবে।

সাধারণত নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে, যারা ভোটার নিবন্ধন হওয়ার পরে ছবি তুলেছেন এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দিয়েছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি। বিশেষ করে ২০২২ সালে নতুন ভোটার হালনাগাদ এর সময় যারা ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

আপনারা চাইলে শুধুমাত্র ফরম নাম্বার দিয়ে আপনাদের ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিস বা ভোটার নিবন্ধন এর জন্য নির্ধারিত জায়গায় উপস্থিত হয়ে যথাযথভাবে ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করার পরে আমাদের একটি ভোটার স্লিপ/ফরম প্রদান করা হয়েছে, উক্ত ফরমে থাকা নাম্বারটি দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার পদ্ধতি

ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, ফরম নাম্বার এবং জন্ম তারিখ প্রদান করে Mobile Number ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে, face verification করে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

 

এছাড়াও খুব সহজে ১০৫ নাম্বারে SMS পাঠিয়ে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার ও তথ্য বের করতে পারবেন। যদি আপনার কাছে ফরম নাম্বার থাকে তাহলে ২টি পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোটার আইডি কার্ড দেখতে পারবেন।

  • ১০৫ নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমে।
  • অনলাইন থেকে nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করে।

নিত্যদিনের চলাচলের পথে একজন নাগরিকের ভোটার আইডি কার্ড গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। আপনার বয়স যদি ১৮ বছর হয় তাহলে আপনি ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন। তবে ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য অবশ্যই ওই দেশের নাগরিক হতে হবে।

১৮ বছর হবার পরে ভোটার নিবন্ধন আবেদন করতে পারবেন, কিন্তু ভোটার নিবন্ধন আবেদন করার ১-২ বছর সময় লাগে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে। এই সময়ের মধ্যে যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয় তাহলে এই লেখাটিতে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ও ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার সংগ্রহ করতে পারবেন।

এসএমএস এর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বের করার পদ্ধতি

এসএমএস পাঠিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করার জন্য প্রথমে আপনার মোবাইল ফোন থেকে Massage অপশনে গিয়ে টাইপ করুন NID এরপরে স্পেস দিয়ে Form Number-টি বসিয়ে দিন। এরপরে স্পেস দিয়ে DD/MM/YYYY ফরমেটে ভোটার আইডি কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জন্ম তারিখ বসিয়ে এসএমএসটি ১০৫ নাম্বারে সেন্ড করুন।

কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার ও যাবতীয় কিছু তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এখন পর্যন্ত অনলাইন সার্ভারে আপলোড করা না হয় সেক্ষেত্রে কোন ধরনের রেসপন্স না আসার সম্ভাবনা বেশি।

এসএমএস ফরমেটঃ NID<Space>Form Number<Space>Date Of Birth (DD/MM/YYYY)

উদাহরণঃ NID 123456789 12/01/2004

তথাঃ NID<Space> আপনার কাছে থাকা ফরম নাম্বারটি বসিয়ে দিন <Space> ভোটার আইডি কার্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জন্ম তারিখ বসিয়ে দিন।

উক্ত ফরমেটে এসএমএসটি সাজিয়ে ১০৫ নাম্বারে সেন্ড করুন। যদি NID Service থেকে প্রীতি এসএমএসে কোন তথ্য জানানোর না হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার আইডি কার্ড এখনো তৈরি হয়নি, অনেক সময় নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে এসএমএস আসে না। এই ক্ষেত্রে আপনারা খুব সহজেই অনলাইন থেকে ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন।

অনলাইন থেকে ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড

অনলাইন থেকে ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকে ক্লিক করুন, এরপরে আপনাদের Nidw (Bangladeshi national identity card) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা হবে। ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা সম্পূর্ণ পদ্ধতি নিচে ধাপ অনুসারে দেখানো হলো।

ধাপ ১: Bangladeshi national identity card ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে আপনাদের অ্যাকাউন্ট করতে হবে, অ্যাকাউন্ট করার জন্য “রেজিস্টার করুন” বাটনের চাপ দিন। অথবা পূর্বে যদি আপনাদের একাউন্ট করা থাকে তাহলে এনআইডি নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

ধাপ ২: এরপরে আপনার কাছে থাকা ফরম নাম্বারটি বসিয়ে দিন, এবং নিবন্ধনের সময় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জন্ম তারিখ বসিয়ে নিচে থাকা ক্যাপচা করতে পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৩: উক্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পরে এই পেইজে ভোটার নিবন্ধনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করুন। এরপরে পরবর্তী বাটনে চাপ দিন।

ধাপ ৪: এই পেজ থেকে আপনাদের মোবাইল ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধনের সময় দেওয়া মোবাইল নাম্বারটি অটোমেটিক ভাবে বসানো থাকবে, যদি কোন নাম্বার দেয়া না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি একটি নাম্বার বসিয়ে “বার্তা পাঠান” বাটনে ক্লিক করুন। কিছু সময়ের মধ্যে nid service থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে, উক্ত কোডটি বসিয়ে বহাল বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৫: এরপরে আপনাদের সামনে একটি QR কোড আসবে। অন্য একটি ডিভাইসে গুগল প্লেস্টোর থেকে Nid Wallet অ্যাপটি ডাউনলোড করুন, তারপরে অ্যাপসটি ওপেন করে QR কোডটি স্ক্যান করুন।

ধাপ ৬: এরপরে অটোমেটিক ভাবে NID Wallet অ্যাপে ক্যামেরা ওপেন হবে, এখানে Start Face Scan বাটনে ক্লিক করে প্রথমে সোজাসুজি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে এরপরে একবার ডানে ও একবার বামে মুখমন্ডল ঘুরিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন।

ধাপ ৭: এই ধাপে সেট পাসওয়ার্ড বাটনে ক্লিক করে একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড সেইভ করুন। এবং এই পাসওয়ার্ডটি সংরক্ষণ করে রাখুন, পরবর্তীতে Bangladeshi national identity card (Nidw) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে প্রয়োজন হবে।

ধাপ ৮: এরপরে প্রোফাইল অপশন এ প্রবেশ করে একটু নিচে থাকা ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে। পরবর্তীতে এটিকে লেমনটিং করে ভোটার আইডি কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

ফরম নাম্বার হারিয়ে গেলে করণীয়

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করার পরে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি এবং যাবতীয় তথ্য প্রদান করার পরে আপনাকে একটি সিলিপের কিছু অংশ কেটে প্রদান করা হয় এটাকে ফরম বলা হয়। এই ফরমে ৮-১০ ডিজিটের একটি নাম্বার দেয়া থাকে, ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংগ্রহ ও স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য এই ফর্মটি প্রয়োজন হয়।

যদি ভুলবশত আপনি কোন কারণে এই ফর্মটি হারিয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব আপনার নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে, জিডি এর কপি এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের নাম্বার নিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন।

টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

টোকেন নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। এরপরে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে, ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করে একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড সেট করুন। পরবর্তীতে প্রোফাইল অপশনে প্রবেশ করে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন।

হয়ে গেল আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড। টোকেন নাম্বার এবং ফরম নাম্বার একই, নতুন ভোটার নিবন্ধনের পরে নির্বাচন অফিস থেকে যেই ফরমের অংশটুকু প্রদান করা হয়েছে তাকে টোকেন নাম্বার কিংবা ফরম নাম্বার বলা হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *