হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন

আপনি কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? চিন্তা করবেন না আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।

আজকের আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন। অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন কারণে ভোটার আইডি কার্ড ভুলবশত বা নিজের খাম খেয়ালীর কারনে হারিয়ে যায়। যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেহেতু আমাদের অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে এই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। কারণ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্মে এবং নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ভোটার আইডি কার্ডের অবশ্যয় প্রয়োজন। আপনারা যারা ইতোমধ্যে কয়েকবার ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে ফেলেছেন তারা রিইস্যুর মাধ্যমে খুব সহজে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

আর যারা এই প্রথম হারিয়েছেন তারা অনলাইন কপি কিভাবে ডাউনলোড করবেন তা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ডের অরিজিনাল কপি সংগ্রহ করার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে আপনারা কি কি কাজ করলে বা কি কি তথ্যের মাধ্যমে আইডি কার্ড তুলতে পারবেন তা বিস্তারিত হয়েছে। তো চলুন নিচে থেকে কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন তা জেনে নিই।

হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোডের প্রয়োজনীয়তা

জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড একজন ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। বর্তমানে নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে বিকাশ, রকেট,নগদ ইত্যাদি যেকোন ধরণের মোবাইল ব্যাংকিং খোলার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের আবশ্যিক প্রয়োজন। বিভিন্ন প্রকার সরকারি সেবা পেতে হলেও ভোটার আইডি কার্ডের আবশ্যিক প্রয়োজন হয়।

কখনো কখনো আমরা দুর্ঘটনা বা নিজের অজ্ঞতার কারণে ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে ফেলি। এর ফলে আমরা বিভিন্ন ধরণের ব্যাংক একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে যেসব ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন সে সকল কাজে বাধাগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পরি। পূর্বে জাতীয় পরিচয় পত্র রি-ইস্যু বা পুনর্মুদ্রণের প্রক্রিয়াটি কিছুটা কঠিন থাকলেও বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনারা নিজ থেকে খুব সহজেই হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয় কি?

কোন ব্যাক্তির আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে সর্ব প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডি দাখিল করা। সাধারণ ডায়েরি বা (GD) দাখিল করা হলে জিডি সম্পর্কিত কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তথ্য গুলো হলোঃ

  • জিডির নম্বর
  • জিডির গ্রহণকারী কর্মকর্তার নাম
  • জিডির গ্রহণকারী কর্মকর্তার পদবি
  • জিডির দাখিলের তারিখ

জিডি কপিতে অবশ্যই দাখিলকৃত থানার সিল এবং জিডি গ্রহণ করে সেই কর্মকর্তার সাক্ষ্য
এসব তথ্য সঠিক ভাবে সংগ্রহ করা হয়ে গেলে আপনার পরবর্তী কাজ হল বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশননের জাতীয় পরিচয় পত্র পোর্টালে ভোটার আইডি কার্ড রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করা। আপনারা যদি সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে নিচে থেকে নিয়ম হজেনেন নিনঃ

কিভাবে থানায় সাধারণ ডায়েরী বা জিডি করবেন?

প্রথমে একটি ফাঁকা সাদা কাগজে একটি সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করবেন, অতঃপর উক্ত সাধারণ ডায়েরি আপনার স্বাক্ষরযুক্ত করে দুইটা কপি করবেন। কপি করার পর টা নিয়ে নিকটস্থ থানায় গিয়ে যে ডিউটি অফিসার থাকবে তাকে দিবেন।

হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড

উক্ত সাধারণ ডায়েরির ফরমটিতে অবশ্যই জিডি নম্বর, ডিউটি রত অফিসারের নাম, সীল, স্বাক্ষর  এবং জিডির তারিখ যেন উল্লেখ থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। তারপর এক কপি নিজের সাথে করে নিয়ে আসবেন। তাও যদি সাধারণ ডায়েরি লেখার কোন ধারণা না পান তাহলে আমি নিম্নে একটি নমুনা কপি দিয়ে দিচ্ছি যার মাধ্যমে আপনি সহজেই ধারনা পেয়ে যাবেন এবং আপনার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।

হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

আপনি যদি উপরের নিয়ম অনুযায়ী হারানো জাতীয় পরিচয় পত্র সম্পর্কিত সাধারণ ডায়েরি বা জিডি লিখে থাকেন এবং যথাযথ তথ্য আপনার কাছে সংগ্রহিত আছে তাহলে এখন আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদন করতে হবে। নিছে থেকে হারানো ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর আবেদন করার নিয়ম যেনে নিনঃ

ধাপ ১ঃ জাতীয় পরিচয়পত্র ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন

সাধারণ ডায়েরী বা জিডি সম্পন্ন করার পরে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। যদি আগে থেকেই একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে এনআইডি নম্বর ও পার্সওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করতে হবে।

ধাপ ২ঃ রিইস্যুর জন্য আবেদন করুন

কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

  • রেজিস্ট্রেশনের সময়ে আবেদনকারীর ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে তবেই ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারবেন। লগইন হওয়ার পর নিচের ছবির মত একটা পেইজ আসবে এখান থেকে রিইস্যু বাটনে ক্লিক করুন।

কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

  • রিইস্যু ওপেন হওয়ার পর একটি জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যুর আবেদন ফরম দেখতে পাবেন। এই ফরমটি সাবধানতার সাথে সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট করতে হবে।

  • ফরমের যে সকল তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। জিডির তথ্য পূরণ করার সময়ে কোন প্রকার ভুল করবেন না এবং পুনরায় তথ্যগুলো যাচাই করার পরে উপরের ডান পাশ থেকে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ ৩ঃ রিইস্যুর পেমেন্ট প্রক্রিয়া

এইবার রিইস্যুর আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন ফি ২ ধরণের – সাধারণ ৩৪৫ টাকা ভ্যাট সহ এবং জরুরী ৫৭৫ টাকা এবং এইটা ভ্যাট সহ। আপনি বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে খুব সহজেই রিইস্যু আবেদন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।

ফি পরিশোধ করা হলে আবেদনের ধরণ সিলেক্ট করতে হবে। আপনার যেটা প্রয়োজন সেটা সিলেক্ট করুন। যদি আপনি রেগুলার সিলেক্ট করেন তাহলে রেগুলার আবেদন ফি পরিশোধ করুন এবং জরুরী সিলেক্ট করেন তাহলে জরুরি আবেদন ফি পরিশোধ করুন। এরপর উপরের ডান কর্নারে “পরবর্তী” বাটন লেখা অপশনে ক্লিক করে আপনার জিডির স্ক্যান কপি ভালোভাবে আপলোড করুন। মনে রাখবেন অবশ্যই ছবিগুলো পরিপূর্ণ আলো এবং সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ডে তুলা থাকতে হবে।এই ধাপ গুলো সম্পন্ন হলে আপনার আবেদনটি সাবমিট করুন। সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদনটি করতিপক্ষ দ্বারা অনুমোদিত করা হবে।

 

ধাপ ৪ঃ জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড প্রক্রিয়া

কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

হারানো জাতীয় পরিচয় পত্রের রিইস্যুর আবেদনটি অনুমোদিত হওয়ার পর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড খুব সহজে ডাউনলোড করতে পারবেন।

কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

আবেদন অনুমোদিত হলে আপনার মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। যতদ্রুত সম্ভব ওয়েবসাইট এ লগইন করে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে সংগ্রহ করে রাখবেন। কারন নির্দিষ্ট সময় শেষে আর ডাউনলোড করা যাবে না।

জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড পেতে কত দিন সময় লাগবে

অনেকেই জানতে চান, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি কমপ্লিট করার কতদিন পরে কার্ড পাঅয়া যায়? আপনার যদি কার্ডটি সাধারণ পিরিয়ডের জন্য আবেদন করেন তাহলে ৩ থেকে ১০ কারয দিবসের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অতঃপর আপনাকে মোবাইল মেসেজ এর মাধ্যমে জানানো হবে। মোবাইলে মেসেজ চলে আসলেই আপনি বুঝে নিবেন যে আপনার কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

শেষ কথা

আশা করি আপনারা কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন তা জেনে গেছেন। মনে রাখবেন এই কাজটি একটি সেনসিটিভ কাজ, তাই কাজটি ভালোভাবে করতে হবে। আশা করি আপনারা কার্ডটি ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও যদি কোন ধরণের পরামর্শের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট এ জানাবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *