জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

সম্প্রতিক গুগলে অনেক সার্চ করা হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে। তাই এই লেখাটিতে জন্ম নিবন্ধন বা জন্ম তারিখ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি দেখানো হবে।

একজন নাগরিকের বয়স ১৮ বছর হওয়ার পরে তার পরিচয় পত্র হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়। সম্প্রতি ২০২২ সালে যারা নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি।

আপনারা জন্ম তারিখ দিয়ে এবং স্লিপ নাম্বার দিয়ে অনলাইন থেকে আপনাদের ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য প্রথমে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য কি প্রয়োজন

অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্টসগুলো সংগ্রহ করে রাখবেন।

  • নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে ভোটার নিবন্ধন এর সময় পাওয়া ফরম নাম্বার। যদি আপনার কাছে ভোটার আইডি কার্ড থাকে সে ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার প্রয়োজন হবে।
  • আপনার জন্মনিবন্ধন সনদে থাকা তথ্য অনুযায়ী জন্ম তারিখ, তথা যে তথ্য আপনারা ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধনের সময় প্রদান করছিলেন।
  • ভোটার নিবন্ধনের সময় দেওয়া মোবাইল নাম্বার অথবা একটি সচল মোবাইল নাম্বার।
  • ইন্টারনেট কানেকশন আছে এমন দুইটি ডিভাইস। দুইটি ডিভাইস প্রয়োজন হবে ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য।
  • এবং উক্ত ডিভাইস দুটোতে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে।
  • পরবর্তীতে ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড এর মালিক তথা যার ভোটার আইডি কার্ড তাকে উপস্থিত থাকতে হবে।

উক্ত ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে এই লেখাটিতে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এই ওয়েবসাইটে ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কিত যাবতীয় সকল সমস্যার সমাধান পাবেন। ভোটার আইডি কার্ড ডটকম  ওয়েবসাইটটি আপনাদের সেবায় নিয়োজিত।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন দিয়ে আপনারা কোনভাবেই ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন না। ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য অবশ্যই ফরম নাম্বার অথবা ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার প্রয়োজন হবে।

জন্ম নিবন্ধন সনদে থাকা তথ্য দিয়ে তথা জন্ম তারিখ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার অথবা ফরম নাম্বার প্রদান করে Nidw ওয়েবসাইট থেকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বের করতে পারবেন। চলুন জাতীয় পরিচয় পত্র অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোডের পদ্ধতি সম্পর্কে দেখে নেয়া যাক।

কোন ব্যক্তি যদি মনে করেন জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা সম্ভব তাহলে তার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্য ছাড়া আপনি কোনভাবেই অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন না।

অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি

অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট (Nidw) ব্যবহার করা হবে। অনলাইন থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য নিচে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

১.অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

জাতীয় পরিচয় পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য Google-এ গিয়ে Nidw লিখে সার্চ করুন। এরপরে প্রথমে যেই ওয়েবসাইটটি আসবে সেখানে প্রবেশ করুন অথবা https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকে ক্লিক করে সরাসরি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

২.একাউন্ট লগইন করুন অথবা নতুন একাউন্ট খুলুন

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যদি আপনার একাউন্ট করা থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার অথবা ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

যদি একাউন্ট করা না থাকে সেক্ষেত্রে নতুন অ্যাকাউন্ট করতে হবে, nidw ওয়েবসাইটে নতুন একাউন্ট করার জন্য রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করুন।

এরপরে যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, যদি জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে তাহলে নিবন্ধনের সময় পাওয়া ফরম নাম্বার বসিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদে থাকা তথ্য অনুযায়ী জন্মতারিখ বসিয়ে দিন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

এরপরে নিচে থাকা ক্যাপচাটি পূরণ করে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন। ক্যাপচাটি বসানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিকভাবে ক্যাপচা পূরণ করতে হবে।

৩.ঠিকানা সিলেক্ট ও মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন| জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

তারপরে আপনার ভোটার আইডি কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমান ঠিকানার বিভাগ, জেলা, উপজেলা নির্বাচন করুন। একইভাবে স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা, উপজেলা নির্বাচন করুন। এরপরে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

পরবর্তী পেইজে ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন করার সময় দেওয়া মোবাইল নাম্বার অটোমেটিক ভাবে চলে আসবে।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

 

 

যদি না আসে তাহলে নতুন একটি মোবাইল নাম্বার বসিয়ে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করুন। উক্ত নাম্বারে একটি ৬ ডিজিটের ওটিপি নাম্বার আসবে। যথাক্রমে ওই ওটিপি নাম্বারটি বসিয়ে মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

৪.এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপস ডাউনলোড ও ভেরিফিকেশন

মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে আপনাদের সামনে একটি নতুন পেইজ আসবে এবং ওই পেইজে একটি QR কোড দেখা যাবে।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

দ্বিতীয় ডিভাইসে Google Play Store থেকে NID Wallet অ্যাপসটি নামিয়ে ওপেন করুন। এরপরে প্রথম ডিভাইসে থাকা QR কোড স্ক্যান করে অ্যাপসটি চালু করুন। Google Play Store থেকে NID Wallet অ্যাপসটি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ডাউনলোড করতে পারবেন।

৫.ফেস ভেরিফিকেশন ও পাসওয়ার্ড সেট করুন| জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

এরপরে দ্বিতীয় ডিভাইসে অটোমেটিক ভাবে ক্যামেরা ওপেন হবে, যার ভোটার আইডি কার্ড তার ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য “Start Face Scan” বাটনে ক্লিক করুন। এরপরে ব্যক্তির মুখমন্ডল ও চোখ সরাসরি ক্যামেরার দিকে রেখে পরবর্তীতে ডানে ঘুরিয়ে এবং বামে ঘুরিয়ে ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

তারপরেই প্রথম ডিভাইসে সেট পাসওয়ার্ড নামে একটি অপশন আসবে। পরবর্তীতে লগইন করার জন্য এখানে নতুন একটি পাসওয়ার্ড বসিয়ে দিন।

৬.ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড

পরবর্তীতে সরাসরি প্রোফাইল অপশনে প্রবেশ করে নিচে থাকা ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ভোটার আইডি কার্ডের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করুন। যদি পাসওয়ার্ড সেট করার পরে পুনরায় লগইন করতে বলে তাহলে আপনাদের ফরম নাম্বার এবং সেট করা পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিন।

জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

এরপরে প্রোফাইল অপশনে প্রবেশ করে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন। আপনার ডিভাইসে ভোটার আইডি কার্ড পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড হয়ে যাবে পরবর্তীতে এটিকে প্রিন্টার দোকান থেকে প্রিন্ট করে জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার প্রয়োজনীয়তা

আমাদের নিত্যদিনে চলার পথে জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে মোবাইল সম্পর্কিত সেবা পাওয়ার জন্য বা ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত কারণে। এছাড়াও সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়।

একজন নাগরিক প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে তথা ১৮ বছর হওয়ার পরে তার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় পত্র হলো ভোটার আইডি কার্ড। তাই আপনারা যারা ভোটার নিবন্ধন করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত আইডি কার্ড পাননি তারা চাইলে উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *